সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:০২ অপরাহ্ন

নিউজ হেডলাইন:
তানোরে কৃষকের ১০ বিঘা জমির খড়ের পালায় আগুন পুড়ে ছাই তানোরে নীতিমালা লঙ্ঘন করে গভীর নলকুপ অপারেটরের আবেদন মোহনপুরে বিএনপি’র দ্বি-বার্ষিক কাউন্সিল অনুষ্ঠিতসভাপতি শামিমুল ইসলাম মুন, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব নির্বাচিত রাজশাহীতে বাসচাপায় প্রাণ হারালেন একই পরিবারের ৩ জন রাজশাহী জেলা কমিটির সম্মেলন অনুষ্ঠিতসভাপতি আসাদ-সম্পাদক আখতার চলনবিল অধ্যুষিত উল্লাপাড়ায় সরিষা ফুল থেকে মধু সংগ্রহের ধুম পবায় অনুদানের নামে ইট ভাটায় চাঁদাবাজি তানোরে জামায়াতের কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত তানোরে দ্বিতীয় স্ত্রীর প্রতারণায় প্রথম স্ত্রী নিঃস্ব তানোরে জনপ্রিয় নেতা মিজানের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচারের বিরুদ্ধে উপজেলা বিএনপির সাংবাদিক সম্মেলন
তানোরের খাদ্য গুদাম সিন্ডিকেটে জিম্মি

তানোরের খাদ্য গুদাম সিন্ডিকেটে জিম্মি

সারোয়ার হোসেন তানোর(রাজশাহী): রাজশাহীর তানোর পৌর সদর গোল্লাপাড়া বাজারস্থ খাদ্য গুদাম কয়েকজন মিলারের কাছে সিন্ডিকেটে জিম্মি হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অন্য মিল ভাড়া করে অধিক পরিমাণ বরাদ্দ নিয়ে বিভিন্ন জেলা উপজেলা থেকে নিম্মমানের হাইব্রিড জাতের চাল দিচ্ছেন বলেও একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেন। শুধু চাল না তারা গুদাম থেকে ভালোমানের ধান নিয়ে ক্রেসিংয়ের নামে পাচার করে নিম্মমানের চাল দেন গুদামে। প্রতিনিয়তই এমন সিন্ডিকেট হলেও দেখভালের কেউ নেই। এছাড়াও ধান চাল সংগ্রহেও এসিন্ডিকেট সক্রিয়। ফলে বছরের পর বছর ধরে সিন্ডিকেট করে আসছেন এচক্রটি। তারা প্রভাবশালী হওয়ার কারনে তাদের ভয়ে কেউ মুখ খুলেনা।
জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে সরকারি ভাবে ধান চাল সংগ্রহ শুরু হয়েছে। প্রতি কেজি ধান ৩২ টাকা ও প্রতি কেজি চাল ৪৫ টাকা কেজি দরে সংগ্রহ করা হবে। কিন্তু বর্তমান বাজার তুলনায় সরকার কম দাম দেওয়ার কারনে প্রান্তিক ও সাধারণ কৃষক রা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। আর চাল সংগ্রহের জন্য ১৮ টি মিল চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। ১৮ মিলের নামে ৪ থেকে ৫ জন মিলার চুক্তি বদ্ধ মিলগুলো ভাড়া নিয়ে চাল দিচ্ছেন এমন অভিযোগ অহরহ। কারন সরকার যে দামে চাল কিনছেন সে দামে চাল পাওয়া দুরহ ব্যাপার। তাহলে এই সিন্ডিকেট চক্র কিভাবে চাল দিচ্ছেন গুদামে এমন প্রশ্ন অন্য ব্যবসায়ীদের।
স্থানীয় বেশকিছু ব্যবসায়ীরা জানান, সরকারের বিভিন্ন বরাদ্দের চাল সিন্ডিকেট করে কম দামে কিনে গুদামে দিচ্ছেন। যেমন মন্দির, গীর্জা ও টিয়ার কাবিখা এবং বিভিন্ন পর্যায়ের উপকারভোগীদের চাল কিনে থাকেন এই চক্র টি। চক্রের অন্যতম মুল হোতা কামারগাঁ ইউপি এলাকার হাজী সেলিম, শাহরিয়ার চাল কলের মালিক নব্য আ”লীগ নেতা একই ইউপির জাকির হোসেন জুয়েল, শাহ রাইস মিলের মালিক তানোর পৌর সদর এলাকার আনোয়ার হোসেন আনু, সুনিল, সাবেক গুদাম সরদার নাজিম উদ্দীন। মুলত তারাই খাদ্য গুদামের অন্যতম নিয়ন্ত্রক।
এচক্রের বিরুদ্ধে ভয়ে অন্যরা কেউ মুখ খুলেনা। কারন তারা ক্ষমতাসীন দলের মোড়ক গায়ে লাগিয়ে বছরের পর বছর ধরে সিন্ডিকেট করেই চলেছেন।
সুত্র জানায়, খাদ্য গুদাম থেকে ক্রেসিংয়ের নামে চিকন ধান নিয়ে পার্শ্ববর্তী জেলা নওগাঁ থেকে হাইব্রিড নিম্মমানের চাল সংগ্রহ করে নিয়মিত গুদামে দিচ্ছেন। কারন এউপজেলায় ক্রেসিং করার মত অটো রাইস মিল নেয়। এসব জানার পরও কর্তৃপক্ষ তাদেরকেই বরাদ্দ দিয়ে থাকেন। এচক্র শুধু চাল না বাহির থেকে হাইব্রিড জাতের মোটা ধান কিনে কৃষকের নামে দিচ্ছেন। কোন মিলার ট্রাকে করে চাল কিংবা ধান গুদামে দিতে পারবেন না। এমন নিয়ম থাকলেও এই চক্রের কাছে কোন নিয়ম লাগেনা।
কৃষকরা জানান, সরকারি গুদামে ধান দেয়া খুবই কষ্টকর। ধান নিয়ে গেলে তাপ নেই, মিটার সো করছেনা সহ নানা তালবাহানা কর্তৃপক্ষের। আবার বাজারে যে দাম সরকারও একই দামে ধান কিনছেন। বাজারে ধান বিক্রি করতে কোন ঝামেলা নেই। অনেক ব্যবসায়ী বাড়ি থেকেও ধান কিনছেন। তাহলে অযথা কেন সরকারকে ধান দিব। যে দামে সরকার ধান কিনছে তাতে করে কোন কৃষক ধান দিবে না। কিছু ফড়িয়া গুদাম সিন্ডিকেট কর্তৃপক্ষের সাথে যোগসাজশ করে বাহির থেকে হাইব্রিড জাতের ধান কিনে গুদামে দিবে। এতে করে কর্তৃপক্ষে ও ফড়িয়ার পকেট ভরবে।
বাজারে নিম্মমানের চালও ৫০ টাকা কেজির নিচে নাই। তাহলে ৪৫ টাকা কেজিতে কিভাবে চাল কিনে সরকার। বিভিন্ন সরকারের উপকার ভোগী ও বিভিন্ন প্রকল্পের চাল কিনে ৩৫ থেকে ৩৬ হাজার টাকা টন। এসব চাল কিনে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অটো রাইস মিলে পরিস্কার করে নতুম বস্তার মোড়কে পুরাতন চাল দিচ্ছে সরকারকে। তাছাড়া এদামে কোন মিলারের ক্ষমতা নেই চাল দিতে। এসব নিয়ে সরেজমিনে তদন্ত করলেই থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে, ধরা পড়বে ভয়াবহ অনিয়ম দূর্নীতি। তবে চাল সংগ্রহ কিছুটা হলেও ধান সংগ্রহ শুরু হয়নি।
তানোর পৌর সদর গোল্লাপাড়া বাজারস্থ খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) মুকুল জানান, ধান সংগ্রহ শুরু হয়নি। তবে ১৮ জন মিলার চাল সংগ্রহের চুক্তি করেছে। এপর্যন্ত ৭০ থেকে ৮০ মে:টন চাল সংগ্রহ হয়েছে। ১৮ জন মিলার চুক্তিবদ্ধ হলেও ৪ থেকে ৫ জন মিলার সিন্ডিকেট করে বাহির থেকে নিম্মমানের চাল দিচ্ছেন জানতে চাইলে তিনি জানান, চুক্তির বিষয় টি উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা ভালো বলতে পারবেন। তবে যে কোন জাশগা থেকে চাল কিনে গুদামে দিতে পারবেন বলে এড়িয়ে যান তিনি।
উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা শেখ মনিরুজ্জামান সজিব বলেন, এবারে উপজেলার দুই গুদামে সরকারি ভাবে ৪৭৭ মে:টন চাল সংগ্রহ করবে। এজন্য ১৮ টি মিলের সাথে চুক্তি হয়েছে এবং ১৫৬৪ মে:টন ধান সংগ্রহ করা হবে। ১৮ টি মিলের সাথে চুক্তি হলেও সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ৪ থেক ৫ জন মিলার বাহির থেকে হাইব্রিড নিম্মমানের ও বিভিন্ন প্রকল্পের পুরাতন চাল দিচ্ছে জানতে চাইলে তিনি জানান, পুরাতন চাল দেয়ার কোন সুযোগ নেই। তবে এউপজেলায় অটো রাইস মিল না থাকার কারনে বাহির থেকে চাল দেন মিলারেরা এটা সঠিক। আর ধান সংগ্রহ শুরু হয়নি। সুতরাং এব্যাপারে বলার কিছুই নেই। তারপরও বিষয় গুলো গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে।

স্যোসাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




Copyright @ 2024 Jonotarsomoy24.com । জনতার সময়২৪. All rights reserved

ডিজাইন ও তৈরী করেছেন- হাবিবুর রহমান নীল