সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৪০ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার :
রাজশাহীর তানোর থানায় দালালদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়রা জানান, চেনা মুখের দালালরুপী একশ্রেণির কথিত মানবাধিকার ও গণমাধ্যমকর্মী প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত থানার সামনে ও আশপাশে উৎপেতে থাকছে। থানায় কোন সেবাগ্রহিতা আশা মাত্র এরা তাদের ছোঁ মেরে আড়ালে নিয়ে সর্বপ্রথম জিজ্ঞাসা করে কি করবেন জিডি, অভিযোগ না মামলা।
সেবা প্রার্থীদের সঙ্গে কথা কাজে মিল পেলে সোজা চলে যায় কম্পিউটার দোকানে। সেখানে গিয়ে মামলা বা অভিযোগ লেখার কম্পিউটার খরচ ও পুলিশের নাম ভাঙিয়ে দালাল চক্রটি হাতিয়ে নেয় মোটা অংকের টাকা। এতে একদিকে সেবাপ্রার্থীর হয়রানি বাড়ছে, অন্যদিকে পুলিশের বদনাম হচ্ছে। তবে, তাদের সঙ্গে পুলিশের একশ্রেণির কর্মকর্তার (দারোগা) সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে, দালাল চক্রের দ্বিতীয় ফাঁদ হলো– তারা এ সকল মামলা বা অভিযোগের বাদী ও বিবাদীর মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে থাকে। পরবর্তীতে তারা সালিশের আকারে থানায় বা থানার আশপাশে বৈঠকের নামে উভয়পক্ষ থেকে হাতিয়ে নেয় মোটা অংকের টাকা। এটা নিয়মে পরিণত হয়েছে। এসব দালাল চক্রের সঙ্গে পুলিশের একশ্রেণির কর্মকর্তার (দারোগা) সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠেছে। মুলত এসব কর্মকর্তার উমেদার হিসেবে দালালেরা কাজ করছে।
উপজেলার মুন্ডুমালা পৌর এলাকার জনৈক ব্যক্তি বলেন, আমি অভিযোগ করার জন্য থানায় যাওয়ার সময় থানার সামনে থাকা কয়েকজন (মানবাধিকার কর্মী-সাংবাদিক) পরিচয় দিয়ে আমাকে বলে, ভাই কেন আসছেন আমাদের বলেন। আমরা সমস্যা সমাধান করে দিবো। আর থানার ভিতরে যাওয়া লাগবে না। এসময় তাদের সামনেই দাঁড়িয়ে ছিল একজন দারোগা তিনিও তাদের সঙ্গে যাবার ইঙ্গিত দেন।
এরা দুপুর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত থানা চত্ত্বরের আশপাশে অবস্থান করে। তাদের প্রধান কাজ থানায় কে কখন কার বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে আসছে আর অভিযোগের তদন্ত কোনো কর্মকর্তার (দারোগা) উপর পড়ছে, সেটা নিশ্চিত হয়ে এরা তদন্ত কর্মকর্তার নামে বাদী ও বিবাদী উভয়ের কাছে থেকে টাকা আদায় করে নিজেরা ভাগাভাগী করে নিচ্ছেন। আর তাদের এসব অকর্মের কারণে পুলিশের সুনামক্ষুন্ন হচ্ছে, অথচ এসব অপকর্মের সঙ্গে পুলিশের কোনো সম্পৃক্ততাই নাই এরা গণমাধ্যম পেশাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে পুলিশের নাম ভাঙিয়ে অপকর্ম করছে।
এব্যাপারে তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান মিজান জনতার সময়কে বলেন, তানোর থানায় দালালদের কোনো অস্থিত্ব নেই। তিনি বলেন, কারো বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এবিষয়ে তানোরে কর্মরত একাধিক পেশাদার সাংবাদিক বলেন, এসব অপসাংবাদিকতার কারণে পেশাদার সাংবাদিকগণের সুনামক্ষুন্ন হচ্ছে। তারা বলেন, পুলিশের সঙ্গে সাংবাদিকের সম্পর্ক থাকবে সেটাই স্বাভাবিক, কিন্তু পুলিশের নামে প্রতারণা করা বা বাদী ও বিবাদীর কাছে থেকে টাকা আদায় করা জঘন্য কাজ। যারা এসব কাজে জড়িত রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে পুলিশেরই ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিৎ, নইলে এদের কারণে পুলিশ বাহিনীর সুনামক্ষুন্ন হবে।
Copyright @ 2024 Jonotarsomoy24.com । জনতার সময়২৪. All rights reserved
Leave a Reply